মোঃ সাইদুজ্জামান সাঈদ:

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির হতদরিদ্র পরিবারে মেয়ে মোহছেনা বেগম নিজ মেধার স্বাক্ষর রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি পরিক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদের মেয়ে। তার এমন ফলাফলে তার পরিবার সহ এলাকার সবাই দারুণ খুশি। পরিবারে অভাব অনটনের সমস্যার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিয়ে অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক ভর্তি কার্যক্রম শেষ করেছে।

এদিকে ফলাফলের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মোহছেনা বলেন, “চট্টগ্ৰাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আল্লাহ তা’য়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বাবা মায়ের কষ্ট সার্থক হয়েছে, আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

শিক্ষকের অবদান ও নিজের কঠোর অধ্যাবসায়ের ফলে দেশের বড় বড় ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে, এখন চট্টগ্ৰাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছে। ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হিসেবে গ্রামের মানুষের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চায় এবং আগামীতে আরো ভালো ফলাফলের জন্য সকলের দোয়া ও ভালোবাসা চেয়েছেন মোহছেনা।

জানা গেছে, মোহছেনা নাইক্ষ্যংছড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.০০ পেয়ে পিএসসি, নাইক্ষ্যংছড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৯৪ পেয়ে এসএসসি ও নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম এ কালাম সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে এইচএসসি শেষ করেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেন, মোহছেনা নাইক্ষ্যংছড়ির একটা অধম্য মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত লাভ করছে। প্রত্যান্ত এলাকার কৃষক পরিবার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পাওয়া সহজ কথা নয়, পিতামাতা ও শিক্ষকদের অবদান অতুলনীয়। পিতামাতা-শিক্ষকদের ধন্যবাদ ও নাইক্ষ্যংছড়ি বাসীর পক্ষ থেকে মোহছেনা বেগম-কে শুভেচ্ছা জানান এবং যেকোনো ধরনের পরামর্শে, সহযোগিতায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন, উপজেলার এই অভিভাবক।

অন্যদিকে হাজী এম এ কালাম সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার জানান, এই প্রথম একজন ছাত্রী একসাথে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের কলেজে থেকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমরা শিক্ষক হিসেবে অনেক গর্বিত। ও ছাত্রী হিসেবে অনেক মেধাবী। আশা করছি সামনে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

আরও বলেন, সে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে। যদিও অটোপাশ তবুও সে কলেজের ইতিহাসে নির্বাচনী পরীক্ষায়ও জিপিএ ৫ পেয়েছে। হিসাববিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়তে চেয়েছিলো কিন্তু যেহেতু ফাইন্যান্সের চাহিদা বেশি, তাই আমার পরামর্শে ফাইনান্স বিষয় নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়েছে। আমি ওর মঙ্গল ও উজ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।